বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নরসিংদীতে মেধাবী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবা

নরসিংদীতে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুলিশের হামলা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১২জনকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান বলেন, পরিকল্পিতভাবে নিরপরাধ ছাত্রদের জীবন ধ্বংসের নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজিত এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোন কারণ ছাড়াই হামলা চালিয়েছে পুলিশ। অন্যায়ভাবে সেখান থেকে ৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থী, আয়োজকদের মধ্য থেকে ৪জন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপালসহ ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অনুষ্ঠানটি ছিলো সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও মেধাবীদের মূল্যায়ন এবং অনুপ্রেরণামূলক। এমন একটি অনুষ্ঠানে পুলিশের অমানবিক ও দায়িত্বহীন আচরণের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। অন্যদিকে গ্রেপ্তারের পক্ষে কোন যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি পুলিশ। বরং লজ্জাজনকভাবে দায়িত্বহীনতাকে আড়াল করতে পুলিশ কর্মকর্তা ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, নাশকতার পরিকল্পনার দায়ে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মুখস্ত বুলি আওড়িয়েছে। গ্রেপ্তাকৃতদের একদিন থানা হেফাজতে রাখার পর ৩টি বানোয়াট মামলায় জড়িয়ে কোর্টে চালান করলে সেখানে কোন শুনানি না করেই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রায় অর্ধশত মানুষের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠান গোপন বৈঠক হয় কিভাবে! দেশে ঘরোয়া অনুষ্ঠান করা কী পুলিশের কাছে অপরাধ! দেশের সংবিধান থেকে অনুষ্ঠান, সভা সমাবেশ করার অধিকার সংক্রান্ত অনুচ্ছেদটি তুলে দেয়া হয়েছে কি না! যদি তুলে দেওয়া না হয়ে থাকে তাহলে পুলিশ আইনের পবিত্র পোষাকে এমন বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে কিসের ভিত্তিতে? মূলত মেধাবী ছাত্রদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেয়ার জন্য পুলিশ এই অনৈতিক ও দায়িত্বহীন আচরণ করেছে। পরিকল্পিতভাবে নিরপরাধ মেধাবী ছাত্রদের প্রতি পুলিশের এই দায়িত্বহীন আচরণ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিরপরাধ ছাত্রদের নিয়ে সরকার ও পুলিশের এই নির্মম তামাশায় জাতি বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অবৈধ সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আইনের লেবাসে এসব দলীয় পুলিশের দায়িত্বহীন বাড়াবাড়ি জাতিকে চরমভাবে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। অবৈধ সরকারের অনৈতিক অনুকম্পা পেতে অতি উৎসাহি পুলিশ সদস্যরা বরাবরাই এমন ঘৃন্য কর্মকান্ডের জন্ম দিচ্ছে। যা জনগণকে দারুণভাবে আশ্চর্যান্বিত করছে। ফলে জনগণের কাছে পুলিশ এখন আস্থাহীনতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। পুলিশের এমন ধারাবাহিক প্রতিহিংসাপূর্ণ তামাশায় হাজারো মেধাবী ছাত্রের শিক্ষাজীবন আজ ধ্বংসের মুখে। জনগণ নিজেদের কষ্টের অর্থে পুলিশকে লালন করে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেয়ার জন্য নয়। অবিলম্বে এমন বেআইনি ও ঘৃন্য অপকর্ম বন্ধ করে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। জনগণ আর এমন অমানবিক তামাশা দেখতে চায় না।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নিরপরাধ শিক্ষার্থীসহ সকলকে মুক্তি দিতে এবং ভবিষ্যতে এমন দায়িত্বহীন কাজ থেকে বিরত থাকতে সরকার ও পুলিশের প্রতি আহবান জানান।