মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১

বাস চাপা দিয়ে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

রাজধানীর রামপুরায় দুই বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতার সময় বাস থেকে ফেলে দিয়ে মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় নামের শিক্ষার্থীকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে শিক্ষার্থী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী ও সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলাম বলেন, গতকাল ২৯ নভেম্বর রাতে রাজধানীর রামপুরায় বাসে উঠার সময় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এসএসসি ফলপ্রার্থী একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বাসের হেলপার। এর আগে ২৪ নভেম্বর গুলিস্থানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লা বহন করা গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় নাঈম হাসান নামে নটরডেম কলেজের এক মেধাবী শিক্ষার্থীকে। গাড়িটির চালক ছিলো না বরং হেলপার গাড়ি চালাচ্ছিল। এভাবে একের পর এক শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হচ্ছে আর প্রশাসন নির্বিকার ও দায়সারা ভূমিকা পালন করে চলেছে। এর আগেও ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসচালক দুই শিক্ষার্থীর উপর বাস উঠিয়ে দিয়ে তাদের হত্যা করে। তৎকালিন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান সাংবাদিকদের সামনে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু নিয়ে হাসি তামাশা করে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিকৃত মানষিকতার পরিচয় দিয়েছিলো। একই সাথে ঘোষণা দিয়ে খুনি পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ নিয়েছিলো। সেই ঘটনার প্রত্যাশিত বিচার এখনও হয়নি। সরকার দলীয় লোকজন ও প্রশাসনের দায়িত্বহীন মদদেই পরিবহন শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অবলীলায় নির্মম হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। অন্যদিকে ছাত্রসমাজের লজ্জার প্রতীক ছাত্রলীগ বরাবরই শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবী আদায়ের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে।

ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, রামপুরায় শিক্ষার্থীকে বাস চাপায় হত্যা নিছক কোন দূর্ঘটনা নয় বরং দুই বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও হিংস্বাত্বক মনোভাবের বহি:প্রকাশ যা প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমের সামনে বলেছেন। এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। এগুলো সরাসরি হত্যাকান্ড। এর আগে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় মেধাবী ছাত্র রাজিবের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে মৃত্যু হয়। একইভাবে জীবন দিতে হয়েছে রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েলকে। এভাবে চালকদের বেপরোয়া আচরণে একের পর এক লোমহর্ষক ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। কোন সভ্য রাষ্ট্রে এ অবস্থা চলতে পারে না। শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে রাজপথে নেমেছে। যা জাতির জন্য লজ্জাজনক। অবিলম্বে শিক্ষার্থী হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আগামী দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে না।

ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ দেশের আপামর জনগণকে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।