শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

পূজা মণ্ডপে হামলার সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যা খবরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।

পূজা মণ্ডপে হামলার সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী ও সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলাম বলেন, পূজা মণ্ডপে হামলার মত একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে চরম দায়িত্বহীনতা প্রদর্শন করেছে কিছু গণমাধ্যমের হলুদ প্রতিবেদক। গাজীপুর ও রংপুরে পূজা মণ্ডপে হামলার সাথে শিবির কর্মী জড়িত বলে গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদক সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পূজা মণ্ডপে হামলার মত ঘৃণ্য ও ইসলাম বিরোধী কাজের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। আসল অপরাধীদের আড়াল করতে সরকারের পরিকল্পনা ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসব ভারসাম্যহীন, উদ্ভট ও গায়েবী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে।


নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে হামলার ব্যপারে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক একটি টিম নিয়ে স্থানীয় পূজা কমিটি, মণ্ডপ কমিটি, ঢাকি, হামলায় আহত ও স্থানীয় হিন্দুদের সাথে কথা বলে এবং তদন্ত করার পর বলেছেন, কুমিল্লার স্থানীয় আওয়ামীলীগের এমপি ও মেয়রের সাথে দ্বন্দের কারণে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যের সরাসরি ইন্ধনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে তারাই পূজা মণ্ডপে হামলা করেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ’আগামী নির্বাচনে ফায়দা হাসিলের জন্য এ হামলা করেছে আওয়ামীলীগের নেতারা। এমনকি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরাও এ কথা স্বীকার করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, ‘কুমিল্লার ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায় পুলিশ, ৯৯৯ ও ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিয়েও রহস্যজনক কারণে কোন সাহায্য পায়নি এবং স্থানীয় পুলিশ সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের কথাতেই চুপ ছিলো। তারা চেয়েছিলো একটা ম্যাসাকার হোক’। একইভাবে রংপুরে দীর্ঘ সময় নিয়ে লোক জড়ো হয়ে পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়ী হামলার সময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় পুলিশের সহায়তা চেয়েও রহস্যজনক কারণে সাহায্য পায়নি। অন্যদিকে এ বছরের মার্চ মাসে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার৷ যিনি ‘মূল আসামি' হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার ঘটনা ঘটে যার নেতৃত্বে ছিলো স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়ী ঘরে হামলা সম্পর্কে বংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ ডয়েচে ভেলে'কে বলেছেন, ‘‘নাসিরনগরে হামলার নেপথ্যে ছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও তার ভাই৷ তাদের আইনের আওয়তায় আনা হয়নি৷ তিনি আরো বলেছেন, যারা হামলা করে তারা গ্রেপ্তার হয় না৷ বিচারও হয় না৷ এর পিছনে আছে রাজনীতি ৷ ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার৷ আরো আছে হিন্দুদের জমি ও সম্পত্তি দখল৷ আর এটা ক্ষমতা না থাকলে করা যায় না৷’’ এভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর খুন, জখম, ধর্ষণ,অত্যাচারের বর্বোরচিত পৈশাচিকতা আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আওয়ামী লোকজনদের দ্বারাই বেশি ঘটেছে ও ঘটছে। বহু আগে থেকেই প্রতিপক্ষের রাজনীতিকে ঘায়েল, ইস্যু তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং দেশ-বিদেশী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নির্যাতনকে পন্থা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে আওয়ামী লীগ। আর তাতে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে আসছে কিছু দলকানা সাংবাদিক।


নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগেও আওয়ামী লীগ ও তাদের সেবাদাস কিছু দায়িত্বহীন সাংবাদিক এমন ঘৃণ্য বিষয়ের সাথে শিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। পূজা মণ্ডপে হামলা নিয়ে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এসব প্রতিবেদন বিকৃত মস্তিস্কের উদ্ভট আবিস্কার।


নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণ সজাগ এবং সচেতন। ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করলেই জনগণ তা মেনে নিবে এমনটি ভাবা বোকামি। এসব উদ্ভট আবিস্কারের সাথে ছাত্রশিবিরের ন্যূনতম কোন সম্পর্ক নেই। নিজ দায়িত্বের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসব সাজানো প্রতিবেদন প্রত্যাহার ও একপেশে উদ্ভট নিউজ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ও গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।