মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১

সাবেক আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদের ইন্তিকালে ছাত্রশিবিরের গভীর শোক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, দ্বীনের একনিষ্ঠ দাঈ, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা মকবুল আহমাদের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ শোক বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী ও সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলাম বলেন, কোটি জনতার প্রিয় নেতা মকবুল আহমাদ আজ দুপুর ১টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর ইন্তিকালে দেশ ও ইসলামপ্রিয় ছাত্রজনতা গভীরভাবে শোকাহত।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জনাব মকবুল আহমাদ এদেশে সুস্থ ও সাহসী রাজনীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি ছাত্র জীবনে ছিলেন তুখোর মেধাবী। জাতি গঠনে অবদান রাখার প্রয়াসে তিনি সরকারি চাকুরি ছেড়ে দিয়ে শিক্ষকতার পেশাকে বেছে নিয়েছিলেন। সাংবাদিকতা পেশায়ও তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ করে ১৯৬২ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। তিনি তৃণমূল থেকে দক্ষতার সাথে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে সর্বশেষ আমীরে জামায়াতের দায়িত্ব পালন করেন। দলের কঠিন সময় যখন দেশী-বিদেশী অপশক্তি জামায়াত-শিবিরকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য চুড়ান্ত নৃশংসতা চালিয়েছে, জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিচারের নাটক সাজিয়ে ফাঁসি দিয়েছে, সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম, জুলুম, গ্রেপ্তার নির্যাতন করেছে তখন তিনি সর্বোচ্চ সাহসিতকতার সাথে মজলুম সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। জনগণের অধিকার হরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদ প্রতিরোধ ও অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তার দক্ষ নেতৃত্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রশিবিরের প্রতি তার অকৃত্তিম ভালোবাসা ও প্রত্যাশা ছিলো আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। সৎ, যোগ্য ও নৈতিকতা সম্পন্ন নাগরিক এবং নেতৃত্বের ঠিকানা হিসেবে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরকেই প্রত্যাশা করতেন। ছাত্রশিবিরের সার্বিক পথচলার প্রিয় রাহবার মকবুল আহমাদের পরামর্শ, ভালোবাসা উৎসাহ আমাদের পথ চলায় সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। দেশ ও ইসলামের জন্য মহান এই নেতার ঐতিহাসিক ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

তিনি স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেছিলেন, শুধু বৈধ-অবৈধ বাছ-বিচার না করে টাকা ছিটিয়ে দেশের বা এলাকার মানুষের কল্যাণ করা যায় না। মানুষকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে বা দ্বীনের দাওয়াত দানের মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন করে সৎ ও নৈতিক জীবন যাপনে সহযোগিতা করাই প্রকৃত সৎ কাজ বা প্রকৃত সমাজসেবা।

তিনি ইসলামী আন্দোলনের অগ্রসনানী উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, শত বাধা, নির্যাতন, হয়রানি সত্তেও তিনি ইসলামের মহান আদর্শ থেকে চুল পরিমান বিচ্যুত হননি। বাংলার জমিনে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। জুলুম সহ্য করেছেন কিন্তু বাতিলের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি বাংলার জমিনে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবেন অনন্তকাল। এই মহান নেতাকে দেশ ও ইসলাম রক্ষার আপোষহীন ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধার সাথেই স্মরণ করবে।

নেতৃবৃন্দ মরহুমের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম কামনা করেন। তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবার যেন ধৈর্যধারণ করতে পারেন সেজন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।