বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধের দাবি ও দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারার প্রতিবাদে বিবৃতি

ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধের দাবি ও সারাদেশে পরিকল্পিত অরাজকতা সৃষ্টির পায়াতারার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক ইসলাম বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ঢাকা মসজিদের নগরী হিসেবে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। কিন্তু মসজিদ নগরী ঢাকাকে ভাস্কর্যের নামে মূর্তির নগরীতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মূর্তি কখনো কোন মুসলিমের জন্য সৌন্দর্য বা শ্রদ্ধার প্রতীক হতে পারে না। মূর্তি স্থাপন মূলত বিজাতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের একটি সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র। এদেশের মুসলমানদের মনে মূর্তির কোন স্থান নেই। কিন্তু মুসলমানদের বিশেষ করে আগামী প্রজন্মকে মূর্তি প্রেমী বানাতে সুকৌশলে দেশে বিজাতীয় সংস্কৃতি মূর্তি প্রসারে কাজ করছে সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জনগণের কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই অনর্থক কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে সরকারের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণ ইতিমধ্যে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের প্রচেষ্টাকে ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে। এমনকি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত অনেকেও বিরোধীতা করেছে। কিন্তু সরকার জনমতের তোয়াক্কা না করে উল্টো জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। একের পর এক রহস্যজনক ঘটনা ঘটছে। আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ নেতারা প্রকাশ্যে বরেণ্য আলেমদের হুমকি দিচ্ছে এবং সরকার শীর্ষ স্থানীয় আলেমদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে আলেম সমাজ তথা মুসলিম সমাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে । ছাত্রলীগ সভাপতি তার সন্ত্রাসীদের ওয়াজ-মাহফিলে হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ওয়াজ মাহফিলে বাধা দিচ্ছে। এতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, সরকার দেশে পরিকল্পিতভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিল করতে চায়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলামে মূর্তি ও প্রাণি আকৃতি ধারণ করে এমন ভাস্কর্যের কোন স্থান নেই। বরং কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ভাস্কর্য আর মূর্তি একই মুদ্রার এপিট-ওপিঠ। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে মূর্তির সাথে মুসলমানদের সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পৃথিরীর সকল ইসলামীক স্কলারের অবস্থান ভাস্কর্য ও মূর্তির বিরুদ্ধে। এদেশের সকল দল মতের আলেম উলামাও এটাকে হারাম বলে ঘোষণা করেছে। এরপরও কিছু জ্ঞানপাপী ভাস্কর ও মূর্তির পক্ষে সাফাই গাইছে। তারা বিবেক থেকে নয় বরং সরকারের অনুকম্পা পেতে বিবেক বুদ্ধি বিকিয়ে দিয়ে মূর্তির পক্ষে কথা বলছে। অন্যদিকে এ সুযোগে নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠীও মাঠে নেমেছে। সরকার তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মত ভুঁইফোড় সংগঠন গুলোকে পৃষ্টপোষকতা দিয়ে রাস্তায় নামিয়েছে। কিছু আলেম নামের চাটুকারও তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। জনগণের বুঝতে বাকী নেই যে, সরকার কুটকৌশলে ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাইছে। কিন্তু প্রাণী বা মানব ভাস্কর্য নির্মাণ ইসলামের দৃষ্টিতে কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি নির্মাণের ষড়যন্ত্র বরদাশ করা হবে না। ভাস্কর্যের নামে মূর্তি নির্মানের বিরুদ্ধে দেশের সকল পর্যাযের আলেম-ওলামা ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং সরকার যদি এরপরও বিজাতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথে হাটা অব্যাহত রাখে তাহলে এদের সকল শ্রেণী পেশার মুসলমানরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। আর তখন যেকোন পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী থাকতে হবে।