ইবি'র দুই মেধাবী ছাত্র ওয়ালীউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের সন্ধান দাবী করে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি
২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে মধ্য রাতে বাস থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী ছাত্র শিবির নেতা ওয়ালীউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসের সন্ধানের দাবীতে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দীন আইউবী বলেন, ব্যক্তিগত কাজ শেষে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৩৭৫০ নাম্বার গাড়িতে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে মধ্য রাতে গাড়ি থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ এন্ড ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী ছাত্র, ছাত্রশিবিরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক অর্থ সম্পাদক মো. ওয়ালীউল্লাহ এবং ফিকাহ বিভাগের মেধাবী ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক আল মুকাদ্দাসকে আশুলিয়ার নবীনগর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে গ্রেফতার করে। কিন্তু দীর্ঘ ৮ বছর হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তাদের গ্রেফতারের স্বীকার করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদেরকে গ্রেফতারের পরেই ৬ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দারুস সালাম ও সাভার আশুলিয়া থানায় জিডি করে তাদের পরিবার।
কিন্তু জিডি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। তাদের ব্যাপারে ২০১২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বিচারপতি আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পুলিশের আইজিকে তলব করে দু’ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তদন্তের অবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
অন্যদিকে তাদের উদ্ধারের দাবিতে ক্যাম্পাসে ধর্মঘট, মানববন্ধন, মিছিলসহ বিভিন্ন আন্দোলন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সরব প্রতিবাদ এবং হাইকোর্টের নির্দেশনার পর ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই মেধাবী ছাত্রকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার বা সন্ধান দেয়নি। এত কিছুর পরও প্রশাসন কর্তৃক বিষয়টিকে উপেক্ষা করায় প্রমাণ হয় তারাই দুই ছাত্রকে গুম করে রেখেছে। অথচ তাদের মা-বাবা আজও সন্তানদের ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে।
সহপাঠিরা তাদের ফিরে পাওয়ার আশায় প্রহর গুনছে। এমনি ভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতারের পর বহু ছাত্রের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের মেধাবী ছাত্ররা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এমন ভাবে গুম হয়ে যাবে তা কল্পনাও করা যায়না। এটা কোন সভ্য রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিফলন হতে পারেনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্য সবার মত ওয়ালীউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসও এদেশের সন্তান। সাংবিধানিক ভাবে তাদের ন্যায় বিচার পাবার অধিকার আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আইনের ধারক বাহকরাই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দুই মেধাবী ছাত্রকে গুম করে রেখেছে। কোন সভ্য সমাজে এমন লোমহর্ষক আচরণ চিন্তা করা যায় না। এত কিছুর পরও আমরা বিশ্বাস করি ওয়ালীওল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেই নিরাপদে আছে। অবিলম্বে তাদের সন্ধান দিতে হবে। অন্যথায় দেশের মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে আস্থা উঠিয়ে নিবে।
নেতৃবৃন্দ এই অমানবিকতার অবসান ঘটিয়ে ওয়ালীউল্লাহ, আল মুকাদ্দাস সহ গুম হওয়া সকল ছাত্রের সন্ধান ও মুক্তি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
সংশ্লিষ্ট
- কারাগারে আল্লামা সাঈদীকে যেমন দেখেছি
- এ আকাশ মেঘে ঢাকা রবেনা
- মুমিনের কোনো দিন পরাজয় নেই
- চারিত্রিক দৃঢ়তা বয়ে আনে সফলতা
- পরিচ্ছন্ন থাকতে চাই শুধু সদিচ্ছা
- পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা
- আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণে মুমিনের করণীয়
- রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনায় প্রয়োজন নৈতিকতাসম্পন্ন, দক্ষ ও পেশাগত নেতৃত্ব
- চেতনায় ২৮ শে অক্টোবর
- আধুনিক ব্যবস্থাপনায় দাওয়াতি কাজের কৌশল