সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

ডাকসু’র ভিপিসহ আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সন্ত্রাসীদের হামলা ও বর্বর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চে’র সন্ত্রাসীদের হামলা ও বর্বর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো বর্বরতার নৃশংস নজীর স্থাপন করেছে ছাত্রলীগ ও কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চে’র সন্ত্রাসীরা। গতকাল দুপুরে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সন্ত্রাসীরা ডাকসু ভবনের গেট তালা দিয়ে ভিতরে অবস্থানরত ভিপি নুরুল হক নুরুসহ তার সহযোগীদের উপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নৃশংস হামলা চালায়। এসময় রুমের আলো নিভিয়ে নৃশংস কায়দায় তাদের পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এই নৃশংস হামলায় ভিপি নূরসহ প্রায় ৩২ জন ছাত্র মারাতœকভাবে আহত হয়েছে। এমনকি তাদের মাঝে পিএম সোহেলকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়। ফারাবিসহ মারাতœক আহত কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক। দীর্ঘ সময় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই বর্বরতা চললেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ প্রশাসন কেউই তাদের রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর আগেও বহুবার নুরুল হক নুরুসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে ক্যাম্পাসকে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। কিন্তু প্রতিবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্র্তৃপক্ষ ও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের সহযোগির ভূমিকা পালন করেছে। আজ ছাত্রসমাজের কাছে স্পষ্ট যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন তাদের নীতি নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদেরকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি করে দিয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের কাছে নতজানু থাকলে এমন গুরত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল পদে থাকার কোন যৌক্তিকতা নেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে ছাত্রলীগ সন্ত্রাস, বর্বরতা আর অসভ্যতার প্রতিকে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসের আখড়ায় পরিণত করেছে। এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র খুন এবং সম্মানিত শিক্ষকদের মারধর ও লাঞ্চিত করেছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। ক্যাম্পাস গুলোকে অবৈধ অস্ত্রের মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে। ক্যাম্পাসগুলোতে তারা প্রতিদিনই টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, ইভটিজিং, র‌্যাগিংসহ নানাবিধ অপকর্ম করে যাচ্ছে। অথচ আজ পর্যন্ত তাদের কোন অপরাধেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও পুলিশ নিরব ভূমিকা পালনের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মদদ যুগিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন নিজেদের বিবেক ও দায়িত্ববোধ ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি করে রাখলেও ছাত্রসমাজ তাদের জান-মাল সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি রাখতে প্রস্তুত নয়। সাধারণ ছাত্রদের উপর অব্যাহত সন্ত্রাসী হামলা ও নির্যাতন ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। অবিলম্বে চিহ্নিত ছাত্রলীগ ও কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চে’র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আবারো বিচারহীনতার মাধ্যমে ছাত্রদের জীবন বিপন্নের ধারা অব্যাহত রাখলে সারাদেশে ছাত্রসমাজ দূর্বার প্রতিরোধ গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। আর তখন যে কোন পরিস্থিতির জন্য দায়িত্বহীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকেই দায়ী থাকতে হবে।

শাহাদাত হোসাইন
প্রচার সম্পাদক
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

 

সংশ্লিষ্ট