মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯

১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের মাসব্যাপি কর্মসূচি ঘোষণা

১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কর্মসূচি ঘোষণা করে শিবির সভাপতি বলেন, জাতির বীর সন্তানদের অসামান্য ত্যাগ ও রক্তসাগর পেরিয়ে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন মানচিত্র আমরা পেয়েছি। কিন্তু ৪৮ বছর পরও প্রকৃত অর্থে জাতি বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, যা আজো স্বপ্নই রয়ে গেছে। আজ প্রমাণ হয়েছে নৈতিকতার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা যোগ্যতাসম্পন্ন দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব ছাড়া জাতির কাঙ্খিত কল্যাণ সম্ভব নয়। তাই মহান বিজয়কে অর্থবহ করতে ছাত্রশিবিরের প্রতিটি কর্মীকে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক ও জনসম্পদে ভরপুর এদেশের উন্নয়নের জন্য ৪৮টি বছর কম নয়। কিন্তু এখনো দেশের অগ্রযাত্রার অবস্থা হতাশাজনক। অথচ বাংলাদেশের সমসাময়িক যেসব দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে তার বেশির ভাগই আজ সমৃদ্ধ দেশের তালিকায় নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমাদের। এখানে উল্টো চিত্র দেখতে হচ্ছে জাতিকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা বীরোচিত ভূমিকা রেখেছেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের বিশাল অংশ আজ অবহেলিত। তাদের উত্তরসুরিদের অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অথচ রাষ্ট্রীয় শক্তি চেতনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত। মহান বিজয়ের চেতনা হওয়ার কথা ছিল এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। কিন্তু দু:খজনকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে স্বার্থ হাসিলের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাতির গৌরবের মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণতি করা হয়েছে। যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সেই মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করেই জাতিকে বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে। যারা আজ নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের একচ্ছত্র দাবীদার মনে করে তাদের দ্বারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুন্ঠিত হচ্ছে বারবার। কিন্তু ছাত্রশিবির তার প্রত্যয় ভুলে যায়নি। বিজয়কে অর্থবহ করতে এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব তৈরীর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এবছর ১৬ই ডিসেম্বর, ৪৯তম মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কেন্দ্রীয় সংগঠন 'মাসব্যাপী বিজয় দিবসের কর্মসূচী' গ্রহণ করেছে। শিবির সভাপতি এ কর্মসূচী ঘোষণা দিয়ে বলেন, বিজয়ের অর্জনকে অর্থবহ করতে সকলকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে। সর্বোচ্চ দায়িত্বানুভুতি নিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।

 কর্মসূচী :
১. বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা সভা।
২. শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল।
৩. যুদ্ধাহত অসচ্ছল পরিবারকে সহযোগিতা প্রদান।
৪. বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের সংবর্ধনা দেওয়া।
৫. মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ।
৬. মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান।
৭. মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের মাঝে শিক্ষা-উপকরণ বিতরণ।
৮. দরিদ্র ও মেধাবীদের মাঝে শিক্ষা-উপকরণ বিতরণ।
৯. রচনা, কুইজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
১০. অনাথ ও পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ।
১১. ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ও ব্লাড ডোনেশন।
১২. মেডিকেল ক্যাম্প।
১৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান।
১৫. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠের আসর ও দেয়ালিকা প্রকাশ।

শাহাদাত হোসাইন
প্রচার সম্পাদক
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

 

সংশ্লিষ্ট