বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯

হার না মানা অদম্য মেধাবীরা জাতির অমূল্য সম্পদ -শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন বলেন, শত বাধা অতিক্রম করে নিজেদের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যারা ভালো ফল করেছে তারাই উৎকৃষ্ট মেধাবী। অসাধ্যকে সাধন করার উজ্জল নজির স্থাপন করেছে অদম্য মেধাবীরা। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশ সমাজ ও পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তারা অবহেলার পাত্র নয় বরং হার না মানা এই অদম্য মেধাবীরা দেশের অমূল্য সম্পদ।

তিনি আজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে সংগ্রামী প্রচেষ্ঠার মধ্যে দিয়ে এস এস সি, দাখিল ও সমমানের পরিক্ষার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অধম্য মেধাবী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যারা এসএসসি ও দাখিলে জিপিএ-৫ পেয়েছে, তাদের নিয়ে ‘অদম্য মেধাবী সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক রাজিবুর রহমান পলাশ, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু, ছাত্রআন্দোলন সম্পাদক আব্দুল জব্বার, স্কুল সম্পাদক শাফিউল আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, এদেশের শিক্ষার্থীরা বরাবরই মেধাবী যা তারা বার বার বিভিন্ন পর্যায়ে ভালো ফল লাভের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে। বহু দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও আল্লাহর রহমতে মেধা-সম্পদে আমরা এগিয়ে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী দারিদ্রতার কাছে হার মেনে অসময়ে ঝরে যায়। প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের মেধাকে দেশের কল্যাণে কাজে লাগানো যায় না। পরিচর্যার অভাবে এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত তাদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখলেও পরবর্তীতে আর এগিয়ে যেতে পারে না। তাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার জন্য সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসেনি। অথচ তাদেরকে সহযোগীতার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে তারাই দেশ ও জাতির কল্যাণে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে তুলে ধরতে পারবে। এ অমূল্য সম্পদকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া চরম দূর্ভাগ্যজনক বিষয়। এই অবস্থায় আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ববান হতে হবে। এসব অদম্য মেধাবীদের দিকে সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। অদম্য মেধাবীরা যেন সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি সমবেত অদম্য মেধাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা দেখিয়েছো কিভাবে প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে সামনে এগুতে হয়। তোমাদের এই চলার গতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ একদিন সোনার বাংলায় পরিণত হবে। আমাদের বিশ্বাস, দৃঢ়তার সাথে পথ চলে একদিন তোমরাই বাংলাদেশকে বদলে দেবে। যে পথ তোমরা পাড়ি দিয়েছো, তাতেই তৃপ্ত হবার সুযোগ নেই। দেশকে ভালোবেসে নিজেদের ক্যারিয়ার গঠনে তোমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।

মেধাবীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ছাত্রশিবির মেধাবীদের প্রিয় ঠিকানা। আমরা চাই তোমরা এই অর্জন ও মেধাকে যথাযথ বিকাশ ঘটিয়ে নিজেকে দেশ এবং জন্য যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোল। দেশ জাতি মানবতা ও সভ্যতার জন্য কল্যামূলক ভূমিকা পালন করো। ছাত্রশিবির অতিতেও অদম্য মেধাবীদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অদম্য মেধাবীদের সংবর্ধনা স্বরূপ ক্রেস্ট প্রদানের পাশাপাশি নগদ অর্থ ও বই প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, ছাত্রশিবির প্রতিবছরই 'নানা প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে যারা মেধার স্বাক্ষর রাখেন' সেই অদম্য মেধাবীদের জন্য কেন্দ্র থেকে শুরু করে অঞ্চল, শাখা ও বিভিন্ন পর্যায়ে সংবর্ধনার আয়োজন করে থাকে।