মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০১৯

জনগণের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা বেগবান করতে হবে -শিবির সভাপতি


বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ অধিকারহীনতার চুড়ান্ত সীমায় অবস্থান করছে। শুধু বেঁচে থাকা নয় বরং স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকারটুকুও এখন জনগনের নেই। এ অবস্থায় অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা বেগবান করতে হবে।

তিনি ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের সম্মানে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এ কথা বলেন। শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন-নিজাম উদ্দিন আল আদনান (সাংগঠনিক সম্পাদক, ছাত্র জমিয়ত), আব্দুর রহমান ফারুকী (সাধারণ সম্পাদক, জাগপা ছাত্রলীগ), শেখ এনামুল হাসান তানিম (সভাপতি, ছাত্র কল্যাণ পার্টি), খান আসাদ (সভাপতি, মুসলিম ছাত্রলীগ), শরিফুল ইসলাম (সাধারণ সম্পাদক, ছাত্র মিশন), সৈয়দ মোহাম্মদ মিলন (কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন), মোঃ শরিফুল ইসলাম (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন), আব্দুর রহমান (সদস্য, কেন্দ্রীয় সংসদ, মুসলিম ছাত্রলীগ)।

নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলাম ও দেশের স্বার্থে কাজ করে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে যে অপশাসন চলছে তা নজিরবিহীন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দেশের মানুষের জন্য যারা খাদ্য যোগান দিচ্ছে সেই কৃষক তার ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ফসলে আগুন দিচ্ছে, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছে। অন্যদিকে ঋণের টাকায় পরিচালিত প্রকল্পের একটি বালিশের খরচ দেখানো হচ্ছে ৬৭১৭ টাকা। এমন ভয়াবহ অপশাসনের চিত্র শুধু বাংলাদেশ নয় বরং বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।

দেশে আজ স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকারটুকুও নেই। সম্প্রতি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাগ্নে গুম হওয়ার পর বিশেষ কারণে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ গুম হওয়া অসংখ্য স্বজনদের আর্তনাদে বাতাস ভারী হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বেআইনি ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা অব্যাহত রয়েছে। অব্যবস্থাপনার ফলে প্রতিদিনই বহু প্রাণ সড়ক দূর্ঘটনায় ঝড়ে যাচ্ছে। সরকারী হিসেবেই দেশে কোটি কোটি বেকার রয়েছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে বেকার নেই; যা বেকার ও বিপদগ্রস্থ মানুষের সাথে নির্মম উপহাস। সম্প্রতি যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা আগের মতই অগ্রহণযোগ্য।

এ বাজেটে কেবল আয়বৈষম্যই নয়, আঞ্চলিকবৈষম্যও বৃদ্ধি করবে। গ্রাম-শহরের বৈষম্যের কারণে অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট হবে। ধনীকে আরও ধনী এবং গরীবকে আরও গরীব করার ফর্মুলা দেয়া হয়েছে এই আওয়ামী বাজেটে। বাজেটে দূর্নীতিবাজদের সরাসরি উৎসাহিত করা হয়েছে। মোট কথা সরকার ও তাদের পোষ্যদের সার্বিক অপশাসন ও অপকর্মের কারণে দেশের মানুষ আজ চরম অনিশ্চিত ও কষ্টকর জীবন যাপন করছে।

তিনি আরো বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দলীয়করণ করা হয়েছে। যেখানে স্বীকৃত খুনি লুটেরার দল আদালতের মাধ্যমে সহজেই ছাড়া পেয়ে যায় সেখানে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও ঠুনকো অজুহাতে কারাবন্দি করে রেখেছে সরকার। একইভাবে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃবৃন্দকে মামলা-গ্রেফতারের মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

এ অবস্থায় ইসলামী ও দেশপ্রেমিক শক্তিকেই ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সাথে নিয়ে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হবে। আমাদের আজকের এই মিলনমেলা জাতিকে আশান্বিত করবে। জাতির প্রত্যাশা পূরণে আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। আমি বিশ্বাস করি জনগণের অধিকার আদায়, দেশ ও ইসলাম রক্ষা এবং জনগণের মুক্তি আন্দোলনে আজকের এ পুনর্মিলনী একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ।