শনিবার, ২২ জুন ২০১৯

ড. মুরসিকে হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে হতে হবে -ড. মোবারক হোসাইন

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন বলেছেন, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ড. হাফেজ মুহাম্মদ মুরসির মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়নি। বরং দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুতরাং ড. মুরসিকে হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদলতে হতে হবে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ইসলামী ও সমমনা ছাত্রসংগঠনসমুহের উদ্যোগে মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম ড. মুহাম্মদ মুরসির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় মাহফিলে বক্তব্য রাখেন- নিজাম উদ্দিন আল আদনান- সাংগঠনিক সম্পাদক, ছাত্র জমিয়ত, আব্দুর রহমান ফারুকী- সাধারণ সম্পাদক, জাগপা ছাত্রলীগ, শেখ এনামুল হাসান তানিম- সভাপতি, ছাত্র কল্যাণ পার্টি, এ এম কে আসাদ- সভাপতি, মুসলিম ছাত্রলীগ, শরিফুল ইসলাম- সাধারণ সম্পাদক, ছাত্র মিশন, সৈয়দ মোহাম্মদ মিলন-কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন, মোঃ শরিফুল ইসলাম- সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন, আব্দুর রহমান- সদস্য, কেন্দ্রীয় সংসদ মুসলিম ছাত্রলীগ।

শিবির সভাপতি বলেন, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তাকে স্বীকৃত অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারজনিত রোগে ভুগলেও তাঁকে সুচিকিৎসা দেয়া হয়নি। পরিবারের সদস্যদের সাথে যথাযথভাবে সাক্ষাতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কারাগারে তাকে অত্যন্ত অবহেলায় রাখা হয়েছে। আদালত এজলাসে মূর্ছা যাওয়ার পর ২০ মিনিট কোন চিকিৎসা না দিয়ে ফেলে রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি এই শহীদের লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আন্তর্জাতিক বহু প্রভাবশালী গণমাধ্যম অকাট্ট তথ্য প্রমাণ দিয়ে বলেছে তাকে পরিকল্পিতভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এতে স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইন্তেকালের পর ড. মুহাম্মদ মুরসির দাফনেও বাধা দেওয়া হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে নিজ শহরে দাফনের আবেদন জানালে তা নাকচ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৮ জুন ভোরে কঠোর গোপনীয়তায় রাজধানী কায়রোর নসর এলাকায় তাঁকে দাফন করা হয়। সেখানে পরিবারের সদস্য ও ড. মুরসির দুই আইনজীবী ছাড়া কাউকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। যা মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন। গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে হত্যায় বিশ্ব শক্তি নিরব ভূমিকা পালন করতে পারে না। এমন বর্বরতায় নিরব থাকলে মানুষ গণতান্ত্রিক পন্থার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে যা বিশ্ব শান্তির জন্য কল্যাণকর হবে না। অবিলম্বে আন্তর্জাতিকভাবে ড. মুরসির হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আজকের এই দোয়া মাহফিল থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, জুলুম-নির্যাতন করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায় না স্বয়ং মিশরই তার বড় প্রমাণ। ড. মুরসির ইন্তেকালে মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্বের শান্তি প্রিয় মানুষের হৃদয় বিগলিত হয়েছে। কোটি কোটি তরুণ তাঁর রেখে যাওয়া কাজকে আঞ্জাম দিতে দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়েছে। সুতরাং সাম্রাজ্যবাদী ও স্বৈরাচারি অপশক্তির ষড়যন্ত্র সফল হবে না, ইনশাআল্লাহ। ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তাঁর এ আত্মত্যাগ মুসলিম উম্মাহ ও সকল মুক্তিকামী জনতা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।

পরে নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে তিনি শহীদ ড. মুহাম্মদ মুরসির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।