প্রশ্নফাঁস শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, জাতি ধ্বংসের আত্মঘাতি খেলায় মেতে উঠেছে সরকার। নিখুত ভাবে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে তারা। দেশকে পরনির্ভর করতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসে করে দিচ্ছে। প্রশ্নফাঁস শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা অঞ্চলের কলেজ দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কলেজ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মাহফুজুল হক, শিক্ষা সম্পাদক রাশেদুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরী নেতৃবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, প্রশ্ন ফাঁস নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। চলমান এসএসসি পরিক্ষাতেও প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। ইতিপূর্বে প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে প্রতিটি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। আর এই জাতি বিনাশী অপতৎপরতার বিষয়টি প্রতিবারই শিক্ষামন্ত্রী নানা চাতুরতার মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফলে আবারো চলমান এসএসসি পরীক্ষায় এ ঘটনার পুণরাবৃত্তি হলো। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ছাত্রলীগ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ স্পষ্ট হয়েছে বহুবার। দেশবাসী মনে করে প্রশ্নফাঁসকারীরা সরকারের অজানা নয় এবং দলীয় পরিচয়ের কারণেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা। বরং ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পারলে কিংবা প্রশ্ন ফাঁসকারীর তথ্য দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে সরকার দায় এড়াতে চাইছে। সার্বিক ভাবে বিবেচনা করলে এটা এখন স্পষ্ট যে, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জাতিকে পঙ্গু করে দিতে চাইছে একটি মহল আর সেই ষড়ন্ত্রের অন্যতম হাতিয়ার করা হয়েছে প্রশ্নপত্র ফাঁসকে। শুধু প্রশ্নফাঁসই নয় সরকারের নির্দেশনায় বেশি নাম্বার দেয়ার অনৈতিক প্রক্রিয়া, ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও পরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এসব গুরুতর বিষয়ে সরকারের এড়িয়ে যাওয়ার মনোভাব ও শিক্ষামন্ত্রীর রহস্যজনক আচরণে জাতি আজ দারুন ভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে। সরকারের এই আত্মঘাতি অবস্থান শিক্ষাব্যবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে। মেধাবীরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছে। দেশবাসী মনে করে, শিক্ষামন্ত্রীর পদে থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। নূন্যতম আত্বসম্মান বোধ থাকলে এই অব্যাহত প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ।
তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁসের ফলে একটি নীতিহীন প্রজন্ম বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থী উভয়ের মধ্যেই এই ব্যাধি সংক্রামিত হচ্ছে। অন্যদিকে মেধার অবমূল্যায়ন মেধাহীনতার পথকে প্রশস্ত করছে। শিক্ষা নিয়ে মানুষের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। অথচ সরকার রহস্যজনক ভূমিকায় স্থির রয়েছে। এর পেছনে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার সুগভীর ষড়যন্ত্র আছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমরা অবিলম্বে এই ধ্বংসাত্বক খেলা বন্ধ করার দাবী জানাচ্ছি। দলীয় বিবেচনার উর্দ্ধে উঠে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত সকলকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রশ্নফাঁস রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এই অনৈতিক তামাশার পরিণাম শুভ হবেনা। জাতি তাদের সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার এই প্রক্রিয়া মেনে নেবে না।
সংশ্লিষ্ট
- কারাগারে আল্লামা সাঈদীকে যেমন দেখেছি
- এ আকাশ মেঘে ঢাকা রবেনা
- মুমিনের কোনো দিন পরাজয় নেই
- চারিত্রিক দৃঢ়তা বয়ে আনে সফলতা
- পরিচ্ছন্ন থাকতে চাই শুধু সদিচ্ছা
- পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা
- আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণে মুমিনের করণীয়
- রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনায় প্রয়োজন নৈতিকতাসম্পন্ন, দক্ষ ও পেশাগত নেতৃত্ব
- চেতনায় ২৮ শে অক্টোবর
- আধুনিক ব্যবস্থাপনায় দাওয়াতি কাজের কৌশল