মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

শহীদদের রক্ত এদেশে ইসলামী আন্দোলনের ভিতকে আরো মজবুত করেছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সাথে বাতিলের সংঘাত ঐতিহাসিক বাস্তবতা। ইতিহাস স্বাক্ষী যুগে যুগে জালিম শাসকেরা জুলুম নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে শহীদের রক্ত কথা বলেছে। চূড়ান্ত বিজয় হয়েছে সত্যেরই। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাসহ নেতৃবৃন্দের শাহাদাত বৃথা যায়নি। তার প্রতিফোঁটা রক্ত এদেশে ইসলামী আন্দোলনের ভিতকে আরও মজবুত করেছে।

আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা আয়োজিত শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি জামিল মাহমুদের সভাপতিত্বে ও মহানগরী সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম সজিবের পরিচালনায় মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন শিবির সেক্রটারি বলেন, ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ সাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই দিনটি ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই দিনে বিশ্বের ইতিহাসে একজন নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে রাষ্ট্রীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ইতিহাস হয়তো একদিন প্রমাণ করবে এটি ছিল একটি রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ড। যে মোমেনা বেগমের স্বাক্ষিতে তার সাজা হয়েছিল তাকে আদালতে হাজির না করে ভুয়া সাক্ষীর জবানবন্দিকে পুঁজি করে তাকে যাবজ্জিবন সাজা দেয়া হয়েছিল। পরে সরকারের পৃষ্টপোষকতায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বধীন কলঙ্কিত গণজাগরণ মঞ্চের দাবী মেনে নিয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আইন সংশোধন করে উচ্চ আদালতে মৃত্যুদন্ড প্রদান করে।

মূল বিচারে ফাঁসি না হওয়া ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় রায় পরিবর্তন করে ফাঁসি দেয়া বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে শুধু একজন আবদুল কাদের মোল্লাকেই হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছে মানবাধিকার, সত্যপন্থা, কল্যাণ, সুন্দর আর ন্যায়ের প্রতীক একজন দেশপ্রেমিক মানুষকে। তিনি বলেন, মৃত্যুর পরিণতি একটি জীবনের পরিসমাপ্তি হলেও শাহাদাতের মৃত্যু সম্পূর্ণ আলাদা। শাহাদাতের রক্তপিচ্ছিল পথ ধরে অবশ্যই ইসলামের বিজয় আসবে। শহীদের মৃত্যু ইসলামী আন্দোলনে নবচেতনার জন্ম দেয়।আল্লাহ যাদের সাহায্য করেন, তাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। শহীদ কাদের মোল্লা মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও সত্যের উপর দৃঢ়তা, বাতিলের কাছে মাথা নত না করে এবং মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান ষড়যন্ত্রকারীদের গালে চপেটাঘাত করেছে। অন্যদিকে তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য প্রেরণার বাতিঘরে পরিণত হয়েছেন। নির্ভিক ভাবে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা বাংলার জমিনকে ইসলামের জন্য উর্বর করে গেছেন। এখন আমাদের কাজ হলো তার এই ত্যাগের উদ্দেশ্যেকে সফল করতে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যাওয়া।

বাতিল শক্তি ইসলামী আন্দোলনের ব্যপারে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে। এই অপতৎপরতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে শুধু ছাত্রসমাজের কাছে নয় বরং প্রতিটি শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন বাতিলের পর্বতসম বাধা-প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে শহীদদের রেখে যাওয়া ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ি করতে হবে। বাতিলের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রমাণ করতে হবে শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি, যেতে পারে না।

সংশ্লিষ্ট