সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

শীতার্তদের কষ্ট লাগবে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, অসহায় শীতার্তরা আমাদের সমাজেরই অংশ। তাদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। অসহায় দুস্থদের দূর্দশা লাঘবের মূল দায়িত্ব সরকারকে পালন করতে হবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরকেও তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে শীতার্তদের সহায়তায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা জরুরী।

কেন্দ্র ঘোষিত পক্ষকাল ব্যাপি শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি আজ ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত শীতার্ত ছাত্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি শাফিউল আলমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাসুম তারিফের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন, সাবেক কেন্দ্রীয় মাদরাসা সম্পাদক সাদেক বিল্লাহসহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, শীত এলেই দেশের কিছু অঞ্চলে হতদরিদ্র মানুষ অমানবিক কষ্ট ভোগ করে। বর্তমানে শীত আর কুয়াশা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে দরিদ্রদের ভোগান্তি সিমাহীন। যা প্রায় প্রতি বছরেরই চিত্র। চলতি শীতে শীতার্ত মানুষের প্রতি সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের সাহায্য এবং সহানুভূতির হাত সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র সরবরাহ করে সাধ্যমতো শীতার্তদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। নিঃস্বার্থভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্য ও সেবা করা মানবধর্ম। এ কাজের জন্য নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরকালিন পুরস্কার প্রাপ্তির কথা ঘোষণা করেছেন। রাসুল সা. বলেছেন ‘এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো মুসলমানকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানি পান করালে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সিলমোহরকৃত পাত্র থেকে পবিত্র পানি পান করাবেন (সুনানে আবু দাউদ)।

তিনি বলেন, শীতে যখন ধনীরা কম্বল মুড়িয়ে উষ্ণতার মাঝে ডুবে থাকেন তখন এসব শীতার্ত মানুষগুলো কিন্তু সরকার ও বিত্তবানদের সহায়তার অপেক্ষায় চেয়ে থাকে। আশায় থাকে, সমাজের স্বচ্ছল বিত্তবানরা তাদের পাশে দাঁড়াবেন। শীতের চরম কষ্ট থেকে তাদের বাঁচাবেন। বাংলাদেশে বিত্তশালী মানুষের সংখ্যা অনেক। কিন্তু এর পরও একশ্রেণীর মানুষ প্রতিবছরই শীতে কষ্ট পাচ্ছে। অথচ এদেশে ধনী-দরিদ্রের বিভেদের দেয়াল থাকার কথা ছিলনা। শুধু মাত্র আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত না হওয়ার কারণে জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশ বরাবরই দরিদ্র থেকে যাচ্ছে। শীতকাল এসব গরীব অসহায় মানুষ গুলোর দূর্ভোগের যেন শেষ থাকেনা। অথচ বিত্তবান সহ সমাজের স্বচ্ছল মানুষ গুলো অস্বচ্ছলদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলে এ কষ্ট অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

শিবির সভাপতি বলেন, যার যার অবস্থান থেকে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানবতাবোধ সম্পন্ন মানুষের কর্তব্য। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সাধ্য অনুযায়ী অসহায় দরিদ্রদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। শীতার্ত মানুষের শীত লাঘব ও তাদের সহযোগিতার জন্য পক্ষকাল ব্যাপি শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে। প্রত্যক জনশক্তিকে শীতার্তদের মাঝে কমপক্ষে একটি করে শীতবস্ত্র বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয় তবুও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে ছাত্রশিবির দুস্থদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে এবং এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা ছাত্রশিবির নেতাকর্মীসহ সমাজের প্রতিটি শ্রেণী-পেশার মানুষ এবং সরকারকে অসহায়, দুস্থ মানুষের শীতের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি

সংশ্লিষ্ট