শনিবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ড. মোবারক হোসাইন

নিরক্ষরতা মুক্ত সমাজ গঠনে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। ১৯৬৫ সালের ৮-১৯ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর উদ্যোগে ইরানের তেহরানে বিশ্ব সাক্ষরতা সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে প্রতি বছর ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালনের প্রস্তাব করা হয়। পরে ১৯৬৫ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৬ সালে ইউনেস্কো প্রথম দিবসটি উদযাপন করলেও ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সাক্ষরতা অর্জন করি,ডিজিটাল বিশ্ব গড়ি’। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৩। আর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) জরিপ অনুযায়ী এ হার ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ। ক্যাম্পের তথ্যের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর তথ্যের ব্যবধান ২১ ভাগ।

সাক্ষরতা কি?
সাক্ষর শব্দের আভিধানিক অর্থ অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি। এখন সাধারণ অর্থে সাক্ষর বলতে পড়া,লেখা ও হিসাব করায় দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে মনে করা হয়। সাক্ষর ব্যক্তি যেন মাতৃভাষায় সহজে লেখা পড়তে ও বুঝতে পারে, মনের ভাব শুদ্ধ ভাষায় বলতে ও লিখতে পারে। দৈনন্দিন হিসাব-নিকাশ করতে ও লিখে রাখতে পারে। বিগত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশে সাক্ষর ও সাক্ষরতার সংজ্ঞায় নানা পরিবর্তন ও বিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে ‘সাক্ষরতা’ শব্দের প্রথম উল্লেখ দেখা যায় ১৯০১ সালে আদম শুমারির সরকারি প্রতিবেদনে। তবে সাক্ষরতার সংজ্ঞা সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে বিবর্তিত হয়েছে। ১৯০১ সালে তা ছিল মাতৃভাষার নাম স্বাক্ষর করতে পারার ক্ষমতা। ১৯৫১ সালে স্পষ্ট ছাপার অক্ষরে লেখা যে কোনো বাক্য পড়তে পারার ক্ষমতা। ১৯৬১ সালে যে বুঝে কোনো ভাষা পড়তে পারত, সে-ই ছিল সাক্ষর। ১৯৭৪-এ যে কোনো ভাষা পড়তে এবং লিখতে সক্ষম ব্যক্তিকে সাক্ষর হিসেবে গণ্য করা হতো। ১৯৮১ সালে কোনো ভাষায় চিঠি লিখতে পারার ক্ষমতা থাকলে তাকে সাক্ষর বলা হতো।

১৯৮৯ সালে তা হয় মাতৃভাষায় কথা শুনে বুঝতে পারা, মৌখিক ও লিখিতভাবে তা ব্যক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন হিসাব করার এবং লিপিবদ্ধ করে রাখার ক্ষমতালাভ। দেশে দেশে সাক্ষরতার সংজ্ঞা অনেক আগে থেকে প্রচলিত থাকলেও ১৯৬৭ সালে ইউনেস্কো প্রথম সাক্ষরতার সংজ্ঞা প্রদান করেছে। একসময় কেউ নাম লিখতে পারলেই তাকে সাক্ষর বলা হতো কিন্তু বর্তমানে সাক্ষর হিসেবে তাকে বলা হয় যে তিন শর্ত পালনে সক্ষম। প্রথমত যে ব্যক্তি নিজ ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য পড়তে পারবে,সহজ ও ছোট বাক্য লিখতে পারবে এবং দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ হিসাবনিকাশ করতে পারবে। এই প্রত্যেকটি কাজই হবে ব্যক্তির প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। সারা বিশ্বে বর্তমানে এই সংজ্ঞাকেই ভিত্তি করে সাক্ষরতার হিসাব করা হয়।

১৯৯৩ সালে ইউনেস্কো এই সংজ্ঞাটি নির্ধারণ করে, তবে বর্তমানে এটিও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এখন বলা হচ্ছে সাক্ষরতা হলো সরাসরি ব্যক্তির জীবনমান পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। বর্তমানে সাক্ষরতার পরিধি শুধু মাতৃভাষা চর্চা ও হিসাব-নিকাশ আয়ত্ত করার মধ্যে সীমিত নেই। কম্পিউটার সাক্ষরতা, আর্থিক সাক্ষরতা, সাংস্কৃতিক সাক্ষরতার মতো বিভিন্ন নাগরিক প্রসঙ্গ সর্বোপরি উন্নত জীবনের জন্য অপরিহার্য মানসম্মত দক্ষতা অর্জন, দেশাত্মবোধ, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির সোপান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

সাক্ষরতা দিবসের উদ্দেশ্য :
সাক্ষরতার বহুবিধ ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। শুধু সাক্ষরতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তিই নয়;বরং সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও মানসিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে প্রাত্যহিক জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এর লক্ষ্য। কেননা সাক্ষরতা শান্তি আনয়নে অবদান রাখে এবং মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করে। শুধু তা-ই নয়,বিশ্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জনেও সাক্ষরতা কাজ করে। যিনি লিখতে ও পড়তে পারবেন,একমাত্র তিনিই জানবেন দেশ ও দেশের বাইরে কোথায় কী ঘটছে। এটি এমন একটি মাধ্যম,যা পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসন এবং প্রতিরোধেও সহায়তা করে। সাক্ষরতার সঙ্গে শান্তির সম্পর্ক বা যোগাযোগ এতটাই বেশি যে অস্থিতিশীল, অগণতন্ত্রকামী এবং সংঘাতপূর্ণ দেশগুলোতে সাক্ষরতার পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত করা কিংবা বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমরা আফ্রিকা মহাদেশের কিছু দেশে লক্ষ করি, যেখানে শান্তির পরিবর্তে প্রতিনিয়ত সংঘাত চলছে। এসব দেশে সাক্ষরতার চিত্র ভালো নয়। মূলত তাদের দিকে তাকালে সাক্ষরতার সঙ্গে শান্তি প্রত্যয়টির একটি যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে সাক্ষরতার গুরুত্ব :
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসটি ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এ জন্য যে কোনো বয়সের প্রত্যেক নারী-পুরুষের জন্য জ্ঞান অর্জন আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন করা ফরজ। জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়,‘তোমরা দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন কর।’ সুতরাং বোঝা গেল শিক্ষার কোনো বয়স নেই,যে কোনো বয়সের লোকের জন্যই জ্ঞানার্জন আবশ্যক।

আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সর্বপ্রথম ওহি ছিল শিক্ষাবিষয়ক। তাই তো বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পড়ার প্রতি আদিষ্ট হয়েছিলেন। তার ওপর নাজিল হলো ঐশীবাণী- ‘(হে নবী!) আপনি পড়ুন! প্রতিপালকের নামে যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক্ব)

শুধু বিশ্বনবীর ক্ষেত্রেই নয়,বরং আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে সব নবী এবং রাসুলদেরকে জ্ঞান বা শিক্ষার সঙ্গেই যুক্ত রেখেছেন। আল্লাহ বলেন,‘হে নবী! আমি আপনাকে এমন সব জ্ঞান (শিক্ষা) দান করেছি;যা আপনিও জানতেন না এবং আপনার পূর্বপুরুষও জানতো না।’ (সুরা আন’আম: আয়াত ৯২)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথাও নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান বা সেনাপতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি দুনিয়ারর মানুষকে উত্তম চরিত্র ও আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে এবং শিক্ষার গুরুত্ব বুঝাতে ঘোষণা করেছিলেন- ‘নিশ্চয়ই আমি শিক্ষকরূপে প্রেরিত হয়েছি।’ অন্য হাদিসে তিনি বলেছেন,‘আমি মানুষকে উত্তম চরিত্র শিক্ষা দিতেই প্রেরিত হয়েছি।’

বিশ্বনবী সুশিক্ষিত জাতি গঠনে সমগ্র মানবজাতির সামনে শিক্ষার মৌলিক নীতিমালা পেশ করেছেন। তিনি নবুয়ত লাভের পর পবিত্র নগরী মক্কার সাফা পাহাড়ের সন্নিকটে ‘দারুল আকরাম’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত প্রথম শিক্ষালয়।

মদিনা মুনাওয়ারায় হিজরতের পর বিশ্বনবী মসজিদে নববিতে তাঁর শিক্ষার কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। যা আজও অব্যাহত রায়েছে। বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মসজিদেই বাদ আসর নিয়মিত শিক্ষাদানে ব্যস্ত থাকতেন। সাহাবায়ে কেরাম তাঁর নিকটে থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে মসজিদে নববীতে বসে থাকতেন। এমনকি নারীদের জন্য তিনি আলাদাভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।

বিশ্বনবীর দুনিয়ার জীবনে মদিনা মুনাওয়ারায় ৯টি মসজিদ ছিল। প্রত্যেক মসজিদেই এলাকাভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। যেখানে সব সময় কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি হাদিস ও দুনিয়াবি প্রয়োজনীয় অন্যান্য কল্যাণমুখী শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। এক কথায়,নিরক্ষরতা মুক্ত সমাজ গঠনে বিশ্বনবীর ভূমিকা ছিল অসপরিসীম। বর্তমান সময়ে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমও নবুয়তি যুগের শিক্ষার একটি প্রচলিত ধারা। যেখানে কোমলমতি শিশু-কিশোররা ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি নিজস্ব ভাষা ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে সহজেই।

ইউনেস্কোর টার্গেট ও বাস্তবতা :
সাক্ষরতা এমন একটি বিষয়,যা একজন ব্যক্তির অর্থনৈতিক,সামাজিক ও মানসিক মনোবল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে,যা বৃহত্তর সমাজকে প্রভাবিত করার মতো উপরোক্ত সব ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। ক্ষুদ্র পরিসর থেকে বৃহত্তর পরিসরে শান্তি আনয়নে সাক্ষরতা কাজ করতে পারে। কেননা,একুশ শতকের এই সময়েও বিশ্বের প্রাপ্ত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭৮ কোটিই লিখতে ও পড়তে জানে না। অর্থাৎ বয়স্কদের প্রতি ৫ জনের একজন নিরক্ষর। আর এই জনগোষ্ঠীর ৬৪ শতাংশই নারী। শিশুদের ক্ষেত্রেও চিত্রটা উদ্বেগজনক। জাতিসংঘ ঘোষিত সবার জন্য শিক্ষা স্লোগানের পরও বিশ্বের সাড়ে ৭ কোটিরও বেশি শিশুই জানে না কী করে লিখতে পড়তে হয়! বিশ্বের মোট অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর তিন-চতুর্থাংশই বাস করছে জনবহুল ১৫টি দেশে। বিপুল জনগোষ্ঠীর অর্ধেককে ২০১৫ সাল নাগাদ শিক্ষিত করার লক্ষ্য পূরণে ইউনেস্কোর ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কর্মসূচি কতটুকু সফল হবে তাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। গ্লোবাল মনিটরিং রিপোর্ট ২০১৫ অনুযায়ী ১০টি সুপারিশ প্রণিধানযোগ্য :

১. শৈশবকালীন যত্ন ও শিক্ষায় গুরুত্ব আরোপ।
২. সব শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনে সক্ষম করে তুলতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা।
৩. যুব ও বয়স্কদের মধ্যে কর্ম ও জীবনদক্ষতা অর্জনপ্রবণতা উন্নত করা।
৪. সাক্ষরতা ও গণিত বিষয়ে জ্ঞানের অধিকার আদায়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের সক্ষম করে তোলা।
৫. জেন্ডার অসমতা থেকে সরে এসে জেন্ডার বৈষম্যহীনতার ওপর গুরুত্ব আরোপ।
৬. শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ।
৭. সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা সহায়তা ও সম্পদ বৃদ্ধি করা।
৮. সমতার ওপর গুরুত্ব জোরদার করা।
৯. পরিবীক্ষণ আরও উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের অভাব পূরণ করা।
১০. শিক্ষার জন্য উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সমর্থন ধরে রাখতে সমন্বয় বিষয়ক চ্যালেঞ্জ উত্তরণ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর সর্বশেষ জরিপ থেকে জানা যায়,২০১৫ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ৬৪ দশমিক ০৬, ২০১৪ সালে ৬১ দশমিক ১৪, ২০১৩ সালে ৬১ দশমিক ০৪, ২০১২ সালে ৬০ দশমিক ০৭, ২০১১ সালে ৫৮ দশমিক ০৮। তাছাড়া সরকারি তথ্য মতে,‘বর্তমানে এ দেশে ৪৫ লাখ বয়স্ক নিরক্ষর রয়েছেন।

যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। অন্যদিকে একটি জাতিকে ধ্বংস করতে চাইলে তার শিক্ষানীতিকে দুর্বল করে দিলেই হয়। যে দেশের সাক্ষরতা হার যত বেশি সে দেশ তত উন্নত। বঞ্চিত এবং নিরক্ষর শিশু-কিশোর এবং যুবকদের শিক্ষার মাধ্যমে দেশের জনসম্পদে পরিণত করা দরকার। তাই নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে যার যার অবস্থান থেকে সকলকে এগিয়ে আসা জরুরি। নিরক্ষরতা, ক্ষুধা দারিদ্র্য ও দুর্নীতি এক একটি হানাদার শত্রুর মতো। এই শত্রুকে হত্যা করতে যে অস্ত্র দরকার তা হচ্ছে শিক্ষা ও সাক্ষরতা। এজন্য চাই সবার জন্য শিক্ষা। চাই নিরক্ষরমুক্ত,শিক্ষিত ও আত্মনির্ভরশীল আধুনিক বাংলাদেশ। আসুন আমরা সমাজ এবং দেশের টেকসই উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলাই এবং আলোকিত সমাজ গড়ি। আগামীর সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন বুনি।

শেষ কথা :
দেশ থেকে আগামী দিনে নিরক্ষরতা চলে গিয়ে শতভাগ সাক্ষরতার দিকে এগিয়ে যাবে—এটাই হোক এবারের আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের শপথ। সাক্ষরতা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার সঙ্গে সাক্ষরতার আর সাক্ষরতার সঙ্গে উন্নয়নের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাক্ষর জাতি সচেতন জাতি। তাই বাংলাদেশের সাক্ষরতার হারকে বৃদ্ধি করতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। তবেই নিশ্চিত হবে ‘সবার জন্য শিক্ষা চাই’। সাক্ষরতা দিবস নিছক যেন আনুষ্ঠানিক না হয়। এই দিবসের প্রকৃত তাৎপর্য নিহিত রয়েছে সর্বস্তরে প্রকৃত ও নৈতিক শিক্ষার বিকাশের মধ্যে।

লেখক : সেক্রেটারী জেনারেল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

সংশ্লিষ্ট