সোমবার, ১৪ আগস্ট ২০১৭

ইবি’তে শিবির কর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র উদ্ধার নাটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

ছাএলীগের অপকর্মকে আড়াল করতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্মীদের উপর ছাত্রলীগের রাতভর হামলা, সাধারন ছাত্রদেরকে হল থেকে বিতাড়ণ, গ্রেপ্তার ও পুলিশ কর্মকর্তার অস্ত্র উদ্ধার নাটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে আড়াল করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মেহেদি হাসানের মত কিছু নীতিহীন বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা। গত কয়েকদিন ধরে ছাএলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল কয়েকদফায় ছাত্রলীগ সাধারন ছাত্রদের নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। ছাত্রলীগের তুলে দেওয়া সাধারন ছাত্রদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ তাদের জড়িয়ে ককটেল নাটককে মঞ্চায়ন করে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও পরিকল্পিত। এসব অস্ত্র উদ্ধার নাটকের পুলিশের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকলেও ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। মূলত বেশ কয়েকদিন যাবত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগীতায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বহু নিরপরাধ বৈধ ছাত্রকে নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দিয়েছে। সেখানে তারা অবৈধ ও সন্ত্রাসীদের উঠিয়েছে। এসব কর্মকান্ড পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেই হচ্ছে। গতকালও হলে হামলা করে, নিরপরাধ ছাত্রদের সারা রাত নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ছাএলীগ। কিন্তু ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের এসব বেআইনি কর্মকান্ডকে আড়াল করতে এবং অবৈধদের হলে স্থান করে দিতে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদি হাসান সুপরিকল্পিত ভাবে এই অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছেন। পুলিশের এই কর্মকর্তা এর আগেও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নজিরবিহীন তান্ডবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বিএনপির মহাসচিবসহ চারদলীয় জোটের বহু নেতাদেরকে নির্যাতন ও বাজে আচরণ করেছিলেন, রিমান্ডে ভয়াবহ নির্যাতন করে আরো অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তারই ধারাবাহিতায় গতকাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ককটেল রেখে নাটক সাজিয়ে নিজেকে আবারো বিতর্কিত করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা । মেহেদি হাসানের মত পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্বহীন ও অমানবিক আচরণে দেশবাসী হতভাগ। নিরীহ ছাত্রদের উপর অন্যায় আচরণে সহযোগির ভূমিকা পালন ও নিকৃষ্ট অস্ত্র উদ্ধার নাটক সুগভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে সচেতন দেশবাসী মনে করে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মদদ দিতে এবং মেধাবী ছাত্রদের জীবনকে বিপন্ন করতেই সরকার ও প্রশাসন ঘৃণ্য রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

অন্যদিকে বাংলাট্রিবিওনের মত কিছু গণমাধ্যম ছাত্রলীগ ও পুলিশের অপকর্ম আড়াল করতে একপেশে ভূমিকা পালন করছে। শিবির নেতাকর্মীদের হামলার খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে এ গণমাধ্যমটি বরাবরই ছাত্রলীগ ও পুলিশের বানোয়াট বক্তব্যের সাথে নিজেদের মনগড়া কথা জুড়ে দিয়ে খবর প্রকাশ করছে। এক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের কোন বক্তব্য নেয়ার প্রয়োজন মনে করছে না। এমন একপেশে ও পক্ষপাতিত্বমূলক অবস্থান কোন ভাবেই সুষ্ঠ সাংবাদিকতা হতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের এই অমানবিক দায়িত্বহীনতায় হুমকির মুখে আজ হাজারো ছাত্রের জীবন। যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, দেশের মানুষ জানে, ছাত্রশিবির আদর্শবাদী সংগঠন ও শান্তিপূর্ণ পথ চলায় বিশ্বাসী। এসব অস্ত্র নাটকের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। বরং সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই পুলিশের সহায়তায় এমন ঘৃণ্য নাটকের অবতারণা করেছে বার বার। আমরা অবিলম্বে এই বেআইনি কর্মকান্ড বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় পুলিশের মদদের ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা তান্ডব অব্যাহত রাখলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না। আর তখন যে কোন পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশানকেই দায় বহন করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ ভবিষ্যতে এমন অন্যায় গ্রেফতার ও সাজানো নাটক থেকে বিরত থাকতে এবং গ্রেফতারকৃত শিবির কর্মীদের মুক্তি দিতে প্রসাশনের প্রতি আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট