রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৭

আদর্শহীন শিক্ষা ব্যবস্থার কারণেই সামাজিক বিপর্যয় ঘটছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, একটি জাতির উন্নতি ও অগ্রগতি নির্ভর করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। এদেশে প্রতিনিয়ত সমাজে যেসব লোমহর্ষক ও লজ্জাজনক ঘটনা ঘটছে তা সামাজিক বিপর্যয়েরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আর আদর্শহীন শিক্ষা ব্যবস্থার কারণেই সামাজিক বিপর্যয় ঘটছে।

আজ রাজধানীতে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখার উদ্যোগে ১৫আগষ্ট ইসলামী শিক্ষা দিবস ও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পালন উপলক্ষে মেধাবী ছাত্রদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি মোজাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক খালেদ মাহমুদ।

শিবির সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মৌলিক সমস্যা হলো শিক্ষাব্যবস্থায় সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া ও কাঠামোর অভাব। যে কারনে যৌন নির্যাতন, শিক্ষক লাঞ্চনা , ছাত্র হত্যা এবং সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে দেশ ছেয়ে গেছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা-সংষ্কৃতি, ধর্মীয় চেতনা ও আদর্শের প্রতিফলন না থাকলে সে শিক্ষা মানুষকে মানুষ রুপে গড়ে তুলতে পারেনা। কিন্তু সেই সভ্যতা অর্জন করতে শিক্ষা ব্যবস্থা হওয়া উচিত ধর্মীয় চেতনা ও আদর্শিক ভিত্তির উপর। কিন্ত স্বাধীনতার পর থেকে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শীক নাগরিক উপহার দিতে সক্ষম হয়নি। তারউপর বর্তমানে দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা আছে তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা, আকিদা-বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখানো হয়নি। ধর্মহীন শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষা আইন করে পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম মুক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে পৌত্তলিক ও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা। ফলে আগামী প্রজন্ম নিজস্বতা হারিয়ে নাস্তিক্যবাদ ও পৌত্তলিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। শহীদ আব্দুল মালেক বহু বছর আগে আশঙ্কা করেছিলেন বর্তমান সামাজিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা সেই আশঙ্কারই প্রতিফলন ঘটছে।


অন্যদিকে কিছু ছাত্রসংগঠন গঠনমূলক ভূমিকা পালন না করে নীতি নৈতিকতা হারিয়ে, ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে পেশি শক্তিকে প্রতিপক্ষ দমনে ব্যবহার করছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ সভাপতি তার নেতাকর্মীদের আইন হাতে তুলে নিয়ে হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই দায়িত্বহীন নির্দেশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরপরাধ ছাত্রদের উপর হামলা নির্যাতন ও তান্ডব চালাচ্ছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন ক্যাম্পাস রক্তাক্ত করা হচ্ছে। এসব তান্ডবের দায় অবশ্যই ছাত্রলীগ সভাপতিকে বহন করতে হবে। সময়ের ব্যবধানে তাকে হুকুমের আসামী হয়ে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আদর্শ ও নৈতিকতার আলোকে আগামী প্রজন্মকে গড়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিতে ছাত্রশিবির প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আর এ প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে ছাত্রশিবির যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রতীক্ষিত সমৃদ্ধ দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে মেধাবীরা। সুতরাং মেধাবীদের দায়িত্ব অন্যদের চেয়ে বেশি। প্রতিটি মেধাবীকে উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কারিগরে পরিণত করতে ছাত্রশিবির তার সাধ্যর সবটুকু দিয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশ ও সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রচলিত ব্যর্থ শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং মেধাবীদের যোগ্য করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট